"কালো রাত"
- মুমির সরকার
কী যে অপয়া ছিল সেই এক কালো রাত!
ঘরে-বাইরে, গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার- আয়ু
শেষ হয়ে আসা ভীমদেব মার্চ আর বসন্ত
বায়ে ঝুলতে থাকা পঁচিশ-এ ছিল সে রাত।
সবুজ পাতা কচি বিশ্বাসে ফুঁটিয়েছিল ফুল
গাছে-গাছে, নিভে আসা আলোয় কোকিল ঘেমে-নেয়ে আকুল হয়ে ডাকছিল প্রেমিকা-
চোখ গেল বুঝি হায়!
পবিত্র সূর্য-আলো পরশে কর্মমুখর নগরের
ছিল বিস্তর কোলাহল অথচ সূর্য ডুবে যেতে
ক্লান্তি-ক্ষুধা-প্রেম-প্রার্থণা-শেষ সমস্ত বিশ্রাম,
আরোপিত দন্ড অতর্কিতে নরক মেনে নেয়
সম্ভ্রান্ত সে নগর!
বসন্ত তাড়নায় যে কিশোরী দেখে নাই খুলে
সর্পিল তা'রি ভাঁজ গোপনে,
সন্ধ্যা রাগিনী কল্যাণীর লগ্ন পেরোতে কি না শক্তপোক্ত লম্পট যোদ্ধারা, প্রকাশ্যে খুবলে
খায় তাই-ই; দলেবলে৷
প্রতিরোধে ছিল না কোন অবশিষ্ট প্রতিবাদী
হাত; চক্ষু বিস্ফোরিত নিথর তরতাজা লাশ
পড়ে আছে আশেপাশে।
অপয়া ছিল না তো সেই সে কালো রাত।
সার্চলাইট অপারেশন,
এক বারুদসমুদ্র পেরিয়ে দেখেছিল ঠিকই
মুক্তির সোপান:
একটি মুজিবুরের কন্ঠ হতে লক্ষ-লক্ষ কন্ঠ
মুক্তির দীপ্ত শপথে,
অকুতোভয় জীবিত কিংবা মৃত জনে-জনে।
অসংখ্য সে কালো রাত পাড়ি দিয়ে অগনন জীবন-যৌবন, খুন আর সম্ভ্রমের বেদীমূলে
ওড়ে ওঠেছিল,
একটিই পতাকা।
একটিই মানচিত্র-
একটিই সে স্বাধীন ভুখন্ড, বাংলাদেশ এর৷